Flickr Gallery

Wednesday, January 8, 2014

শিক্ষামন্ত্রী আর তৃণমূলে ব্রাত্য নন


আমাদের রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী এখন এক নতুন কায়দা শুরু করেছেন। সরকারের হেডমিস্ট্রেস হয়ে বসেছেন তিনি। আর দেখ না দেখ যাকে তাকে যখন তখন পাশ করিয়ে দিচ্ছেন। যাকে তাকে যখন তখন ফেল করিয়ে দিচ্ছেন। ফেল করে গেলে আবার পদচ্যূত করা হচ্ছে। পাশ করে গেলে পদলেহনের সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। এইভাবেই আমাদের রাজ্যের উন্নয়ন গড়গড়িয়ে এগিয়ে চলেছে। শাসকদলের সব নেতাই নিত্যদিন ‘মায়ের ভোগে’ লাগছেম। রাজনীতি ব্যাপারটাই গোলমেলে। কে যে কখন কি মন্তব্য করবেন তা শুধু ভগার মা জানেন। রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী সহ নাট্যজীবি ব্রাত্য বসুর বুদ্ধিজীবিদের সম্পর্কে সাম্প্রতিক মন্তব্য বাংলার বুদ্ধিজীবিদের পক্ষে মঙ্গলময় নয়।

ভাঙড়ের ‘বুদ্ধিজীবি’ আরাবুল ইসলামকে যেদিন তিনি রবীন্দ্রনাথের পাশের চেয়ারে হেলান দিয়ে বসিয়ে দিলেন সেদিন থেকেই বোঝা যাচ্ছিল তিনি আর বেশিদিন শাসকদলের মধ্যে ব্রাত্য থাকবেন না। তারপর একদিন একটি বিশেষ শিক্ষক সংগঠনের যাবতীয় শিক্ষকদের ‘হার্মাদ’ বলে তাঁদের হাতে গান্ধীগিরির গোলাপ দিয়ে ‘গেট ওয়েল সুন’ বলতে বলে তাঁর উপদেশ। পরের পর শিক্ষক নিগ্রহ এবং শিক্ষা ক্ষেত্রে যাবতীয় অশান্তি নিয়ে শিক্ষামন্ত্রীর মুখের কুলুপ আঁটা দেখে বোঝা যাচ্ছিল তিনি আর বেশিদিন হেডমিস্ট্রেসের কাছে ব্রাত্য থাকবেন না। স্কুল সার্ভিস কমিশনের চেয়ারম্যান প্রদীপ শূর চিটফান্ডের মালিক। সুরেন্দ্রনাথ কলেজের পরিচালন সমিতির সরকার মনোনীত সদস্য এবার কান কাটা দেবু। বাম আমলে ‘অনিলায়ন’এর মধ্যগগনেও সে আমলের মন্ত্রীরা এমনভাবে নিজেদের নাক কান কাটেননি। উদাহরণের শেষ নেই। আমার আসলে অত সময় নেই।

তারপর তিনি শাসকদলের হেডমিস্ট্রেসের কাছে ব্রাত্য না হওয়ার জন্যে বলে ফেললেন মার্ক্স-লেনিন এরা সবাই প্রাসঙ্গিকতা হারিয়ে ফেলেছে। এটাও ছিল তাঁর পাশ করার কৌশল। লেনিন-মার্ক্স বাদ পড়ে গেলে তাঁর কপালে পাশ মার্ক্স জুটতে পারে। শিক্ষামন্ত্রী হয়েও তাঁকে ঘন ঘন পরীক্ষা দিতে হচ্ছে দেখে বুকের মধ্যে কেমন যেন হচ্ছে তাঁর। রেলের আমল থেকেই পরীক্ষা শুরু হয়েছিল। তখন দিদিমণি পাশ ফেল করাতেন রাস্তায় নামতে দেখে। এখন যুগ পালটেছে। তবু এখনও পরীক্ষা দিতে হচ্ছে। যতদিন বাঁচবে বাছাধন ততদিন পরীক্ষা দিতে হবে। 

এক কালে সিঙ্গুর নিয়ে মাতামাতি করতে হত সুশীল সমাজ, নাগরিক সমাজ আর বুদ্ধিজীবি সমাজের লোকেদের সঙ্গে নিয়ে। রাস্তায় নেমে সেই সব আদিখ্যেতা এখন নস্টালজিয়া। এখন নষ্টের গোঁড়া ওরাই। দম্ভের ঘোড়া এখন টগবগ করে ছুটছে। শাসক শ্রেণীর রক্ত এখন তাঁর শরীরে টগবগ করে ফুটছে। তাই ভায়া সবাইকে ঠগ বলে ফেল। ব্রাত্য নাহলে তো ব্রাত্যই থেকে যাবে। পেশাদার রুদালি বলার পেছনে ব্রাত্য না হওয়ার পিছটান ছিল। রুদালিরা পয়সা নিয়ে কান্নাকাটি করেন। এক আমলে ব্রাত্য বসু স্বয়ং রুদালির কাজ করেছেন। রেলের পয়সা পেয়েছেন। এখন তিনিই শাসক। তাঁকে আর রুদালি বলা চলেনা। যাঁরা নন্দীগ্রামের থেকে ভোল বদলে মধ্যমগ্রাম হয়ে গেলেন, যাঁরা কামদুনিতে গিয়ে কাঁদুনি গাইলেন তাঁদের রুদালি বলে ফেলে ব্রাত্য বসু শাসকদলের জাতে ওঠার সিঁড়িতে আরেক ধাপ এগিয়ে গেলেন।
Related Posts Plugin for WordPress, Blogger...
বাংলা ব্লগ জগতের সিন্ধুতে আমরাও একটা বিন্দু। নেট ঘেঁটো বাঙালির আপ্যায়ণে বড় হচ্ছে। শৌভিকের লেখা পড়তে এই ব্লগে যান LEKHASHAUBHIK.BLOGSPOT.COM