Flickr Gallery

Saturday, April 14, 2012

পাগলির উলঙ্গ নৃত্য দেখে লজ্জা পেল মানুষ



পাবলিক এখন রামগরুড়ের ছানা। হাসতে তাদের মানা। হাসাতেও তাদের মানা। পাবলিক তুমি গোমড়া মুখে বসে বসে পাগলির ভজনা কর। নুন না খেয়েও গুণ গাও। এখন একটি রাজ্যের অবস্থা এইরকম। কোন রাজ্যের এই রকম অবস্থা? বলতে পারব না। বুঝে নিন। আইনের ফাঁক রাখছি। কোন এক বিশিষ্ট মহিলাকে পাগলি বললেও যেন তিনি আমার বিরুদ্ধে মানহানির মামলা না করতে পারেন। পাগলির পাগলামি দেখে পাবলিক ভিরমি খাক। দশ বছর চুপ থাকুক পাবলিক।

অধ্যাপক একটি কোলাজ চিত্র তৈরি করলেন। তাকে কার্টুন বললে ভুল হবে। তাকে ব্যঙ্গচিত্র বললেও ভুল হবে। দু তিনটি ফটো কেটেকুটে একটি পাতায় সেঁটে তার মধ্যে কয়েকটি মন্তব্য। এটি একটি এসএমএস-এর চিত্রাঙ্কণ মাত্র। এতেই বিস্ফোরণ। পাগলির মাথা ফেটে খানখান। চুল ছিঁড়ছে পাগলি। পাগলি আবার একজন কেউকেটা। হাতে অনেক গুন্ডা। সে আবার গুন্ডা কন্ট্রোল করে। পাগলি তার গুন্ডাদের পাঠিয়ে দিল অধ্যাপক পেটাতে। তারা অধ্যাপককে পিটিয়েও দিল। কিছু একটা লিখিয়ে নিল। গুন্ডারা অধ্যাপক পিটিয়ে ছাড় পেয়ে গেল। ‘অভব্য’ কোলাজ বানানোর দোষে দোষী হয়ে গেলেন অধ্যাপক। পাগলির ঘনিষ্ঠ পাগলরা বলল, যা হয়েছে ঠিক হয়েছে। আইন একেবারে আইন মেনে চলবে। পাগলি চেঁচামিচি করে বলে উঠল দোষ করলে তো ফল ভোগ করতেই হবে। কিন্তু দোষটা কে করল? পাগলির দোষ না অধ্যাপকের দোষ? পুলিশের দোষ? না গুন্ডাদের দোষ? কে শোনে কার কথা! এমন এক পাগলের দেশে আমরা বাস করছি যেখানে পাগল আর গুন্ডাদের ভক্তি না করলে হাজত বাস। অধ্যাপক হাজত বাস করে এলেন।

অথচ আইনের রক্ষকরা আইন না মেনে চলছে। যারা পিটুনি দিল তারা গ্রেফতার হল না। যিনি পিটুনি খেলেন তাঁকেই গ্রেফতার হয়ে যেতে হল। এরকম কান্ড একটি রাজ্যে দিনের পর দিন বেড়ে চলেছে। পাগলির গুন্ডারা মানুষ পিটিয়ে দিয়ে কলার উঁচু করে ঘুরে বেড়াচ্ছে। পাগলি বলছে মানুষে নাকি জবাব দিচ্ছে। পাগলির মানুষ মানে গুটি কয়েক গুন্ডা। তারা কেমন জবাব দিচ্ছে তা কি কেউ জানেন না! না বলব না ভাই। গ্রেফতার হয়ে যেতে পারি। তবে আমি নিয়ম ঘেঁটে যথেষ্ট নিয়ম মেনেই একটি পাগলিকেই পাগলি বলছি। ব্যাকরণ মেনেই বলছি যে পাগলামি করে সেই পাগল। আর পাগলের স্ত্রীলিঙ্গ পাগলি।

কেউ কেউ বলছেন ব্যাপারটা হাস্যকর। না। একেবারেই হাস্যকর পরিস্থিতি নয়। ব্যাপারটা বেদনাদায়ক। হাসি দিয়ে ব্যাপারটা উড়িয়ে দিলে আবার এরকম ঘটনা ঘটবেই। এরকম পাগলামি বিন তুঘলকের ছিল। তিনিও নাকি বদ্ধ পাগল ছিলেন। তিনি নাকি খামখেয়ালি ছিলেন। তিনিও নাকি স্বৈরাচারী ছিলেন। হিটলারও নাকি পাগল ছিলেন। তবে তিনি তাঁর সমালোচনা পছন্দ করতেন না। এবং সমালোচকদের হত্যা করতেও পেছপা হতেন না। মুসোলিনিও তাই। না। আর বলবনা। বললেই আমাকেও জেলে যেতে হতে পারে। সব স্বৈরাচারীরাই তো পাগল কিংবা পাগলি। ভারতের কোন এক রাজ্যে এখন একটি পাগলি তার সবরকম লজ্জার গন্ডি পার করে উলঙ্গ নৃত্য করছে তা তো বলা যেতেই পারে। তার উলঙ্গ নৃত্য দেখে তার পরিবারের সবাই লজ্জায় মুখ লুকোচ্ছে। তাও বলা যেতে পারে।

আমি কিন্তু ভয় পেয়ে কোন একটি বিশিষ্ট মহিলাকে উলঙ্গ নর্তকী বললাম না। দেখুন কাল আমি জেলে থাকি না বাইরে থাকি। দিনকাল খুব খারাপ। খামোখা বীরের মতো এগিয়ে গিয়ে হাঁড়িকাঠে আমি পড়তে চাইনা। তাই নিজের পরিচয় গুপ্ত রেখে আরও নিশ্চিন্তে নাকে সরষের তেল দিয়ে ঘুমোব এবার। রাজ্য যাক রসাতলে। তাতে কি! দশ বছর চুপ থাকতে হবে তো। এখন তো সবে দশ মাস হল। এখনো অনেক অনেক দিন বাকি। ততদিন কেউ কিন্তু হাসবেন না। ততদিন কেউ পাগলি বলবেন না কাউকে। খবরদার।
Related Posts Plugin for WordPress, Blogger...
বাংলা ব্লগ জগতের সিন্ধুতে আমরাও একটা বিন্দু। নেট ঘেঁটো বাঙালির আপ্যায়ণে বড় হচ্ছে। শৌভিকের লেখা পড়তে এই ব্লগে যান LEKHASHAUBHIK.BLOGSPOT.COM